হোম আমাদের সম্পর্কে জেলা বিচার বিভাগের ইতিহাস
ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভোলা জেলার ইতিহাস:
ভোলা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ। সুপ্রাচীন কাল থেকেই এই জেলা গৌরব ময় ও বৈচিত্র্যর্পূণ ইতিহাসের অধিকারী। ভোলা বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রাচীন গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ। ভোলা জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় 1984 সালে। পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার অধীনে সাব ডিভিশন ছিল। তখন এর প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল বর্তমান দৌলতখানে। 1869 সালে সাবডিভিশন হিসেবে বরিশাল জেলার অধীনে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে 1876 সালে প্রশাসনিক কেন্দ্র দৌলতখান হতে ভোলায় স্থানান্তর হয়। বর্তমানে ভোলা জেলাতে 7টি উপজেলা ও 70 টি ইউনিয়ন আছে। ভোলার নাম করণের পেছনে স্থানীয় ভাবে একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। ভোলা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এক সময় প্রচলিত ছিল বেতুয়া নদী নামে। খেয়া নৌকার সাহায্যে নদীতে পারা পার চলত। খুব বুড়ো এক মাঝি খেয়া নৌকার সাহায্যে লোকজন পারা পারের কাজ করত। তার নাম ছিল ভোলা গাজি পাট নি। আজকের যোগীর ঘোলের কাছেই তার আস্তানা ছিল। এই ভোলা গাজির নাম অনুসারেই এক সময় নাম করণ হয় ভোলা।
ভোলা আদালতের ইতিহাস:
1845 সালে বৃটিশ শাসনামলের প্রথমার্ধেই দৌলতখান মহকুমা প্রতিষ্টিত হয়। 1877 সালে দৌলতখান থেকে মহাকুমা সদরদপ্তর স্থানান্তরের পরে দুই জন মুন্সেফ নিয়োগ করে সাবেক সাব রেজিস্ট্রি অফিস গৃহে আদালত স্থাপন করা হয়। উকিল মোক্তারে ভরে উঠে আদালত, গড়ে ওঠে নতুন শহর। পরবর্তীতে 1984 সালে ভোলা জেলা ঘোষিত হওয়ার পর এখানে জজ র্কোট প্রতিষ্ঠিত হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালত: ভোলা জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন জনাব এস.এম আব্দুস সামাদ। বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জনাব মো: মহসিনুল হক।
ম্যাজিস্ট্রেট র্কোটঃ 1লা নভেম্বর 2007 সালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ভোলা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলেন প্রমর চন্দ্র বিশ্বাস। বর্তমান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলেন জনাব শরীফ মো: সানাউল হক।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালঃ ভোলা জেলায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আছে। এটি 2018 সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে জনাব নুরুল আলম মো: নিপু (বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ) এর বিচারক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
চৌকি আদালতঃ ভোলা জেলায় দুটি চৌকি আদালত রয়েছে। একটি হচ্ছে চরফ্যাশন উপজেলায়; অন্যটি মনপুরা উপজেলায়। চরফ্যাশন চৌকি আদালতটি 2010 সালে এবং মনপুরা চৌকি আদালতটি 1984 সালে স্থাপিত হয়। চরফ্যাশন চৌকিতে 4টি আদালত রয়েছে- একটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত, একটি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত, একটি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং একটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রয়েছে। মনপুরা চৌকিতে একটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রয়েছে।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসঃ ভোলা জেলায় একটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিস রয়েছে। বর্তমানে জনাব সাব্বির মো: খালিদ (সহকারী জজ) জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আদালতের অবকাঠামো:
ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতটি একটি তিন তলা বিশিষ্ট ভবন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও নির্মাণাধীন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাঝখানে একটি দৃষ্টি নন্দন পুকুর রয়েছে।
ভোলা জেলা বার এসোসিয়েশন:
ভোলা জেলা বার এসোসিয়েশন বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী বার। 1888 সালে 9 জন আইনজীবীর সম্বনয়ে ভোলা আইনজীবী সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। 1903 সালে বর্তমান গাজীপুর রোডে নিজস্ব টিনের ঘরে সমিতির কার্যক্রম চালু হয়। ভোলা বারের প্রথম মুসলিম আইনজীবী জনাব হাটন আরী মুন্সী এবং প্রথম হিন্দু আইনজীবী জনাব রজনী নাথ কর। ভোলা বারের বর্তমান সভাপতি জনাব আলহাজ্ ফরিদুর রহমান মিঞা এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব মো: মাহাবুবুল হক লিটু। এছাড়াও চরফ্যাশনে একটি আলাদা বার এসোসিয়েশন রয়েছে। উক্ত বারের বর্তমান সভাপতি জনাব মো: রমিজ উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব মো: মোজ্জাম্মেল হক।